সম্ভাবনাময় কানাডা

৬৭টি বাংলাদেশের সমান কানাডা। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। গোটা যুক্তরাষ্ট্রের চাইতেও বড়। জনসংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের দশ ভাগের এক ভাগ। মাত্র তিন কোটি ষাট লাখ। এর মধ্যে ৫৯ লাখের বয়স ৬৫ বছরের ওপরে এবং ৫৮ লাখের বয়স ১৪ বছরের নীচে। এই প্রথম কানাডার ইতিহাসে সিনিয়র সিটিজেনের সংখ্যা শিশুদের চাইতে বেশী। এখন যারা সিনিয়র সিটিজেন তারা ছিল ‘বেবি বুমারস্’ জেনারেশন। ১৯৪০ এর আগে কানাডায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতির দিকে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। গত একশ’ বছরে ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত কানাডায় শিশু জন্মের হার ছিল সবচেয়ে বেশী। এই জেনারেশনটিকে বলা হয় ‘বেবি বুমারস্’ জেনারেশন। ১৯৬৫ এর পর বিয়ের হার তুলনামূলক একটু কমে যায়, বিয়ে করলেও দম্পতিরা বাচ্চা কম নেয় কিংবা দেরিতে নেয়, লিভিং টুগেদার বাড়তে থাকে, কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলাফল পাওয়া গেছে ২০১৬-এর শুমারিতে। শিশুর তুলনায় বৃদ্ধের সংখ্যা বেশী। শ্রমবাজারে ২২ লাখ লোকের ঘাটতি। ২০১৫-২০১৬তে তিন লক্ষ একুশ হাজার

ইমিগ্র্যান্ট নেয় কানাডা যেটা ১৯১০ এর পর সর্বোচ্চ সংখ্যা। ইন্ডিয়ান দের পাশাপাশি চাইনিজরা এখানে বিশাল সংখ্যায় আস্তানা গাড়ছে। চারপাশে চোখে পড়ার মত চাইনিজদের সংখ্যা। আমার ছেলে রাফিনের ক্লাসে ৩০ জন  ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বেশির ভাগই চায়না কিংবা কোরিয়া থেকে আসা। তবে মনে রাখতে হবে, এরা সবাই মেধা দিয়ে এখানে জায়গা করেছে। এদের বাবা-মায়েরা হয় স্টুডেন্ট ভিসায় কিংবা ইমিগ্র্যান্ট হয়ে কানাডায় প্রবেশ করেছে। এ বছরও তিন লাখের ওপর ইমিগ্র্যান্ট নেয়া হবে। যারা এখানে আসার প্ল্যান করছেন, দেরি না করে এক্সপ্রেস এন্ট্রি পুলে জয়েন করুন। মনে রাখবেন, আপনার ফাইল ওপেন  করার আগে ২টি জিনিস রেডি থাকতে হবেঃ IELTS এবং  Educational Credential Assessment (ECA)-এর কাগজ। দ্বিতীয়টি কানাডা থেকে করিয়ে নিতে হবে। এটা IQAS থেকে করাবেন তাতে সময় কম লাগবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ WES  থেকে করায় কিন্তু ওখানে প্রায় তিন মাস চলে যায়। ৫০ ডলার বেশি দিয়ে  IQAS থেকে সার্টিফিকেট মূল্যায়নের কাজটি করলে আপনার দুমাস সময় কম লাগবে।

যেকোনো রেটিং-এ (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা) কানাডা সবসময় পৃথিবীর সেরা পাঁচটি দেশের একটি। কানাডার পাসপোর্ট গ্রহণ করলে আপনি বাংলাদেশেরটাও রাখতে পারবেন। এক্সপ্রেস এন্ট্রিতে যারা আসছেন তারা সর্বোচ্চ চার বছরের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। তারপর, পৃথিবীর ১৭২ দেশে ভিসা মুক্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। আর, মায়ের দেশ বাংলাদেশে ফিরে যাবার পথ তো খোলাই রইলো। 🙂

Leave a Reply