কাজ হচ্ছে কাজ!

বাংলাদেশের একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের সংবাদে দেখলাম থাইল্যান্ডের এক এয়ারলাইন্সের কবিন ক্রু এই লকডাউন পিরিয়ডে চাকরি না থাকায় বাড়ি বাড়ি খাবার ফেরী করে বেড়াচ্ছে। খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক উদ্যোগ। মানুষ পৃথিবীর সবথেকে সৃষ্টিশীল প্রাণী সেটার প্রমাণ মেলে দুর্যোগের মুহূর্তে। দুর্যোগকে নানাভাবে মোকাবেলার জন্য মানুষ তার সৃষ্টিশীলতা দিয়ে নানা উপায় বের করে ফেলে এবং টিকে থাকে। ‘সৎ ভাবে উপার্জনের যেকোনো পথ কিংবা কাজই হচ্ছে কাজ’ এই মানসিকতা অবলম্বন করা এখন আরও বেশি জরুরী হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার তরুণের কাছে এই মেসেজটি পৌঁছাতে পারলে এবং তাদের অনুপ্রাণিত করতে পারলে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা শুধু তাদের পায়ের নিচের মাটিই শক্ত করবে না, দেশের খুঁটিও শক্ত করবে। এই থাই কেবিন ক্রুর কথাই ধরুন। সে যদি তার খাবারের মান, দাম এবং সার্ভিস ঠিক রাখতে পারে তাহলে এই উদ্যোগ দাঁড়িয়ে যাবে সেটা বলাই বাহুল্য। এমনও হতে পারে সে আর এয়ারলাইন্সের চাকরিতে ফেরত গেল না, বরং তার এই স্বাধীন ব্যবসায় আরো পাঁচ/দশ জনকে কর্মের সংস্থান করে দিল। সবই সম্ভব, তাই না? সতের কোটি মানুষের দেশে সতের লক্ষ রকম কিংবা অন্ততপক্ষে সতের হাজার রকম ক্ষুদ্র ব্যবসা সম্ভব কারণ সতের কোটি মানুষ অর্থাৎ ব্যাপক চাহিদা। সব ব্যবসাতেই যে প্রচুর মূলধন লাগে সেটিও ঠিক নয়। যে এলাকায় কাজ শুরু করছেন সেই এলাকায় খানিকটা পরিচিতি, সুনাম এবং একশত ভাগ সততাই হতে পারে মূল পুঁজি। বাংলাদেশ টেলকোগুলো এক সময় দেখতাম মন ছুঁয়ে যাওয়া কিছু বিজ্ঞাপন প্রচার করত টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে। দেশের কোটি তরুণকে নিজের জীবনের সফলতার গল্প নিজে লেখায় অনুপ্রাণিত করার জন্য এখন দরকার হৃদয়গ্রাহী কিছু মেসেজ, সরকারি-বসরকারি সমস্ত পক্ষ থেকে।

Leave a Reply