রাগ নিয়ন্ত্রণ

একটি ছেলের ভীষণ রাগ। অল্পতেই রেগে যায়। পুরো পরিবারকে সবসময় অস্থির করে রাখে। ছেলেটির বাবা একদিন তাকে বলল, ‘এর পর থেকে যখনই তোমার রাগ উঠবে, ঐ কাঠের দরজায় একটি পেরেক ঠুকবে।’ পরদিন রাতের বেলা দরজায় সতেরটি পেরেক পাওয়া গেল। ছেলেটি যখনই রেগে যায় দরজায় গিয়ে একটি পেরেক ঠুকে দিয়ে আসে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল  দিন যত যেতে লাগলো, পেরেকের সংখ্যাও কমতে লাগলো। ছেলেটি একদিন সন্ধ্যায় আবিষ্কার করল, সারাদিন সে একটি পেরেকও ঠোকেনি। আনন্দের সাথে সে বাবাকে জানালো, “বাবা, আজ সারাদিন আমি একবারও রাগ করিনি। দেখো, দেয়ালে আজ কোন নতুন পেরেক নেই।” বাবা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলল, “আমার খুব ভাল লাগছে, বাবা। এবার তুমি একটা একটা করে পেরেকগুলো কাঠের দরজা থেকে তুলে ফেল।” সব পেরেক তোলা হয়ে গেলে ছেলে বাবাকে জানালো। বাবা কাছে এসে ছেলেকে দরজাটি দেখিয়ে বলল, “বাবা, তুমি তো রাগ নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছ। কিন্তু গত দু’সপ্তাহে রাগের সময় যে ক্ষত তৈরি করেছ, এটা কি ঠিক হবে?”

এভাবেই আমরা রাগের মুহূর্তের আচরণ দিয়ে ক্ষত তৈরি করি যা হয়ত আর কখনোই সারানো যায় না। রাগ একটি সুস্থ, স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু সেটা তখনই ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়, যখন এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন” একটি অতি ফালতু কথা। পাকিস্তানিদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা রেগে না গেলে স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। আপনার সফটওয়্যারে রাগ আবেগটি দেয়া হয়েছে ব্যাবহার করার জন্যই। কিন্তু ব্যাবহারটি হতে হবে কল্যাণের লক্ষ্যে, নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে। একবার রাসূল (সাঃ)এর কাছে এসে এক ব্যাক্তি জিজ্ঞেস করল, “সুন্দর ভাবে জীবন পরিচালনা করার জন্য আমাকে কিছু উপদেশ দিন।” উত্তরে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বললেন, “রাগ নিয়ন্ত্রণ করো।” লোকটি এরপর আরও উপদেশ চাইল। রাসূল (সাঃ) আবারও বললেন, “রাগ নিয়ন্ত্রণ করো।” লোকটি তৃতিয়বারের মত উপদেশ চাইলে আল্লাহর রাসূল আবারও বললেন, “রাগ নিয়ন্ত্রণ করো।”

ভাল থাকুন। রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ক্ষমা করতে শিখুন।

Leave a Reply